আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রাঙ্গণে মঙ্গলবার (আজ) জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও আওয়ামী লীগ শাসনের সময় সংঘটিত গুম, হত্যাসহ অন্যায়ের বিচার নির্বাচন শেষ হলেও অব্যাহত রাখতে হবে — সেই লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছেই একটি রোডম্যাপ দাবি করেছেন তিনি।
ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতেই এ দাবি জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি এই দিন দুপুরে শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে বলিভুক্ত মামলায় সাক্ষ্য দেয়ার জন্য উপস্থিত ছিলেন। মামলার ৪৬তম সাক্ষী হিসেবে ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের সাক্ষ্য নেওয়া চলছিল; সেই সাক্ষ্যের কাজ দীর্ঘ হওয়ায় নাহিদ ইসলাম দুপুর পৌনে তিনটার দিকে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর যে নৃশংসতা হয়েছিল, আমরা অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর প্রথমেই দাবি করেছি—জানিয়ে দেওয়া উচিত এই রাষ্ট্রীয় অপরাধগুলোর বিচারের সুসংগঠিত ও দ্রুত কিন্তু সুষ্ঠু বাস্তবায়ন। বিচার যেন নির্বাচনের পরে থেমে না যায়—সেই আশ্বাস দিতে হবে সরকারের পক্ষ থেকে।”
তিনি আরও জানান, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত হলে রায় ঘোষণার জন্য মামলা রায়ের দিকে যাবে বলেই মনে করেন তিনি। তবে দেশে গণহত্যাসহ নানা ধরনের নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে আরও অনেক মামলা রয়েছে, সেগুলোও দীর্ঘমেয়াদে বিচারপ্রক্রিয়ার আওতায় থাকতে হবে — এজন্যও রোডম্যাপের প্রয়োজন আছে।
নাহিদ বলেন, “নির্বাচনের পরেও যেন এই বিচারপ্রক্রিয়া কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়—ট্রাইব্যুনাল ও অন্যান্য আদালতে এসব মামলা অব্যাহত থাকবে—এই প্রতিশ্রুতি দেওয়ার জন্য আমরা একটি সমন্বিত রোডম্যাপ চেয়েছি। আমরা আশা করব সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারেও এই প্রতিশ্রুতি ধরা থাকবে।”
ট্রাইব্যুনালের চলমান বিচারিক কার্যক্রম নিয়ে সন্তুষ্টি সম্পর্কে প্রশ্ন করলে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, “এখন পর্যন্ত আমরা সন্তুষ্ট। যে প্রক্রিয়া চলছে তা রায়ের দিকে দ্রুত এগোচ্ছে। তবে বাকি যে মামলাগুলো আছে, সেগুলোতেও যেন যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়—এটা আমরা চাই। সরকার নির্বাচনের আগে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসে একটি সমন্বিত রোডম্যাপ ঘোষণা করুক।”
শেখ হাসিনা ফিরে এনে বিচারের চেষ্টা সম্পর্কে তিনি বলেন, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে এবং আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে সরকারকে এগোতে হবে। “তাঁকে ফিরিয়ে এনে শাস্তি প্রদান করা এই সরকার সহ যেকোনো সরকারের নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব হবে,” যোগ করেন নাহিদ ইসলাম।
